Friday 13 November 2020

রোগ

অদূরে ঐ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেমিকার মত নিবিড় হতে চায় না 

ইতিমধ্যে গান না শুনে কান আমার খিটখিটে 

ব্যথায় কাঁপছে ত্বক 

আড্ডা ঠেক হাতছানি দিয়ে ডাকে 

বাড়ির ছাদে মাল্টি স্পেসালিটি হাসপাতালটি গোলাপ গাছ হয়ে বেরোলে 

শব্দ অভিধানের মত বুর্জোয়া রোগ 

এই বিশাল হৃদয়ে শরীরে 

বেকনীয় চিকিৎসায় ছুড়ে ফেলে দেব ।


মিসড কল হতে পারব না মোবাইলের 

অথবা কন্ঠস্বরের প্রিয় শব্দ 

যদি মুখ চাওয়া চাওয়ি করে মরে যেতে হয় 

তবে তা-ই স্বীকার্য।।


দেহ

 তোমার দেহ গাছের পাতা ঘন সবুজ 

চিরস্থায়ী চোখের মতো 

প্রসারিত নয় সঙ্কুচিত নয় 

তবুও সদ্যস্নাত সতেজতার আবেশ 

কুসুমিত থাকার ভীষণ সংযম 

নির্বানের পথে নয় 

চিরস্থায়ী পথে 


দেহ দেবতাদের মতো 

সহজাত প্রবৃত্তি নিভিয়ে রেখেছে তা 

বল্গাহীন ছুটে চলেছি স্রোতের মুখে 

টুকরো টুকরো 


এই অস্তিত্ব ষড়রিপুর জন্য 

এই অস্তিত্ব তিন গুণের জন্য 

এই অস্তিত্ব সত্তার জন্য।

পঙ্গপাল


বাউলের একতারার শব্দে পালিয়ে যেতে পারতে 

এক মুঠো দানা ছেড়ে যাওয়ার ছিল কি প্রয়োজন?

বেদনার স্মৃতি বুনে দিয়ে যায়, শোষণ 

উচ্ছিষ্ট মাছের কাঁটার কঙ্কালসারির মতন।


চলে গেছে এই পীড়া অন্য দেশের ভিতর 

বুকের ভেতর এখনো ওড়ে ওরা।

বুঝি শৈবালরেখা করে দেয় প্রাচীর 

সময়ের ভিতর কপাল গেছে পোড়া।

গাছ রমণী

 তোমার শরীরে শাখা প্রশাখায় জোনাকি জ্বলে 

ভিজে গেছে পায়ের তলার মাটি 

স্মৃতি ঝরে টুপটাপ 

নিভে যেতে যেতে চলে যায় অন্যত্র 


পিকনিক বসে এখানে

ফয়সাল‌ও হয় 

বক্তৃতার শরৎকাল ফোটে 

আমি বাড়ি আঁকি তোমার ছায়ার তলে 

ওষুধ নেই ঘরে


রোগ রাখার জায়গা আছে ঘরে, ওষুধের নেই
বিছানায় তোষক আছে, ওষুধের সেই।
কিছু সময়ের সঙ্গী সাথী বছর খানেক রোগ
ইচ্ছা পূরণ অনেক বাকি শুরু থেকে দুর্ভোগ।
এই বছরের শেষে কি হবে কি জানি
উত্তরোত্তর পর্বে ভাঙবে কি ভরসা খানি?
কলরোল, মিথ্যাচার, অকাল্পনিকে শহর আছে ভরে, ওষুধের নেই
অনেক লোক পদে আছে, কিছু বিপদে, ওষুধের সেই।

ঝড় কেটে গেলে


একদিন ঝড়ের পরে নীল আকাশ দেখার সৌভাগ্য হবে মানুষের মন, হৃদয়, চামড়ায় 

ঘাঘড়ার মতো পাপড়ি উঠবে ফুটে

ডুইকার হরিণের আগুনে পোড়ানো মাংস! 

স্কয়ার ফেস জিনের একটি বোতল! 

এক আধ চুমুক তখন আমার চুমু খাওয়া দুই ঠোঁটে--- গলায়---- পেটে 

চমৎকার মানুষ আমি 

বিশ্বশ্রেষ্ঠ বাচাল 

অসম্ভব ঠান্ডা--- ভিজে চুপচুপে--- রাত 

যদি পাওয়া যেত শুকনো কাঠ 

উম আগলে রাখা হত শরীরে 

হোক না তবুও ঘুণে খাওয়া 

পিঁপড়েদের‌ও বাস 

আনন্দ উঠবে জেগে পাখিদের ধুলোমাখা ডানায় 

এই জগৎ মৃন্ময়, চিন্ময়, পূর্ণ হোক কানায় 

একটু একটু করে ত্রিকূট পাহাড়, চিল্কা হ্রদ 

দিনের আলোর মতো অন্ধকার এসেছে নেমে 

দলপতিও উদ্বাস্তু নয় আছে ঘর এসেছে থেমে 

শেষ গন্তব্য লাইট হাউসের‌ই পথে আবেগের ছায়াতলে মিলিয়ে যাবে বহু সুর এই চেয়ে 

শূন্য জানালা দুয়ার জটলা পেতে হাট বাজারের মতো মনে হয় এ নৈমিষারণ্য বড়োই একঘেয়ে 

ছোট হয়ে এলো এই মুহূর্তে চোখের উচ্চতা 

লোকের ছেলেদের বিয়ে হবে না কো আর 

লুকিয়ে না রেখে এ বোতল দিয়েছি খুলে 

আনন্দে চিৎকার করে উঠি বারবার।

এই আছো এই নেই


গ্ৰিলের কাছেই ছিলে দাঁড়িয়ে, আকাশ তখন মেঘ শূন্য, চলে গেছিলাম দেখেই, ঠাকুর দেখার মতো।


তুমি ছিলে না ভিখিরি,

তুমি ছিলে না মাঝির ব‌উ,

অথবা কোন বিক্রেতা ওয়ালী,

পাশের বাড়ির কোন বিবাহিতা। 


এমনি উঠেছিল ঝড়, যেমনি সবার আসে 

ফিরতে চাওয়ার তাড়া ছিল না তোমার 

কুকুরের দল ছিল না পাড়ায়, কোন মাসে 

উঠে নাই ঝড়, অথবা যদি নামে অন্ধকার।


বাড়ি

 আমার‌ই আছে মুখ-- আর যাদের আছে ভাষা কিছু বুঝি না 

বাড়ি, পথ, রাস্তা নেই মুখ তাই লিপি খুঁজি না।


কিছু ইতিহাস হয়েছে তৈরি, স্বার্থের‌ই লোভে 

তাঁত এখনো ক্ষত শূন্য তাঁতিই শুধু ডোবে।


নাড়ি নেই নেই প্রাণ--- যা আছে শুধু আমার 

একটি বাড়ি কথা বলে শুনি না আমি আর।

কঠিন তপস্যা

কঠিন তপস্যা, তবুও মনে হয় ছেলেখেলা 

পার্কেই বসে আছি চুপ 

কান্না-- হৃদয়ের কেঁদে যাচ্ছি খুব 

পার হতে হবে সময়ের ভিতরকার বারবেলা।

আমি বসে থাকি চুপ 

কিছুই নেইকো খাবার, কিছুই নেইকো করার 

অনেকেই থাকতে না পেরে যাচ্ছে মরে 

অবিচলিত রূপ।

ঘর বাড়ি, পাকা রাস্তা, মাঝে মাঝে, গাছ দেখি চোখে 

কে মরল, কে বাঁচল আমার কি আসে যায়।

আমার‌ও অনেক কাল করার কিছুই নাই 

পেরেছি কি হতে জগ্যি এ বিষাদের‌ নোখের?

চোখ বুজে আসে



উর্বর এক শয্যা, হৃদয়, পাথরের মতো,

করুণ বিষাদের সুরে বারবার ডুবে যায়, 

সবুজে, ঘন পানায় ছোঁয়ানো জলে।

অসুস্থ কান এ সুরের অহরহ বৃষ্টিতে;

এ বিষাদের দমকা বাতাস ঝড় হয়ে গেছে,

এ বিষাদের জলোচ্ছ্বাস হয়ে এসেছে প্লাবন,

এক ধাক্কায় বেড়ে গেছে ভিড় রাশি রাশি,

ডি. এ. পি., ইউরিয়া, ছোট ছোট দানার। 

আমি চোখ তুলে তাকাতে পারি না,

পৃথিবীর চোখে রাখতে পারি না চোখ,

ঘ্রাণে নেশাতুর নাসারন্ধ্র, ভীষণ।

ভালোবাসা বাসি বাদ

 এককথায়, এখন ভালোবাসা বাসি বাদ 

নেই আর সোনা, মিশে গেছে খাদ।


প্যানডেমিক; বাঁচতে চাওয়ায় অপরাধ;

এই প্রস্থান, পাকা কথা, নেই কোন খাদ।


এখন ভালোবাসা বাসি বাদ 

নাকে নেই গন্ধ, জিভে নেই স্বাদ।


Friday 25 September 2020

অনুকাব্য

 ভীড় আছে তাই ভালোবাসা 

স্বতন্ত্রতা হলে একান্তই শরীরযাপন।।


Saturday 9 May 2020

"ক্যানভাস"

"ক্যানভাস"

তুমি একটা ক্যানভাস। তোমার দেহ সাদা। শিশুর মনের মতো। যা খুশি আঁকি তুমি গ্ৰহণ কর। গাছ, নদী, ঝরনা, পাহাড় সব। সব-ই এঁকেছি। কখনো ঘুম থেকে পড়ে গেছি খাদে। কখনো গোখরো সাপে তাড়া করে। কখনো অকায় মিলন। একটা সূর্য ওঠে। ডুবে যায়। দূর্বা ঘাসের ধর্ম আঁকি। খড়্গ আঁকি। বাতাস বয়। তোমার ভঙ্গিমা। জল পড়ে। খাঁজ। ক্যানভাসে রঙ ছেটায়। হাত বেঁধে রাখি। তারপর ক্লান্তি। আমি চলি। প্রস্থান করি না। বিশ্রাম নিই। আবার ফিরে আসি। যুদ্ধ চলে। 

"সংসার"

"সংসার"

এক মুহুর্তে কত কথা বলা শেষ
বিদ্বেষী মনোভাব সব শেষ
হারিয়ে দিয়েছ এই বেশ
হারিয়ে দিয়েছ এই বেশ
একটি কবিতা
আমি মিত্র তুমি মিতা
তুমি মা আমি পিতা
সংসার হবে আবার
পথ হল না যাবার
...শেষমেশ ।


Wednesday 8 April 2020

Riders to The Sea by J. M. Synge

Translation of Riders to The Sea by J. M. Synge

নোরা- (আস্তে করে) মা কোথায়?
ক্যাথলিন- মা শুয়ে পড়েছে, ঈশ্বর সহায়তা করুন, যেন ঘুমাতে পারে, যদি সক্ষম হয়।
নোরা সন্তর্পণে আসে, একটি পুঁটলি নেয় শালের চাদর থেকে।
ক্যাথলিন- (সুতো বুনছে) তুমি কি নিচ্ছ?
নোরা- তরুণ পুরোহিত খুব আগ্রহী। যে জামা আর সাদামাটা মোজা খোলা হয়েছিল এক ডুবন্ত মানুষের থেকে ডাংগলে।
ক্যাথলিন হঠাৎ নড়েচড়ে চাকা থামিয়ে দেয় এবং শোনে।
নোরা- আমরা দেখব ওইগুলো মাইকেলের কিনা,মাঝেমাঝে মা সমুদ্রের তীরে খুঁজবে।
ক্যাথলিন- ওইগুলো মাইকেলের, কেমন করে, নোরা?
কিভাবে সে সুদূর দক্ষিণের দীর্ঘ পথে যাবে?
নোরা- তরুণ পুরোহিত এমন‌ই কিছু বললেন। তিনি বলেন যদি এইগুলি মাইকেলের হয় তুমি মা'কে বলতে পারো সে সম্পূর্ণ কবরস্থ হয়েছে ঈশ্বরের আর্শীবাদে; এবং যদি এইগুলি তার না হয়, কাউকে কিছু বলতে হবে না অনথায় সে কেঁদে কেটে মরে যাবে।
বাড়ির দরজাটা নোরা ঠেসিয়ে দিয়েছিল হঠাৎ এক দমকা বাতাসে খুলে যায়।
ক্যাথলিন- (উদ্বিগ্নভাবে বাইরে তাকায়) তুমি কি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলে তিনি কি বার্টলের গলওয়ে ফেয়ারের দিকে যাত্রাটা থামাতে পারবেন?
নোরা- তিনি বলেন আমি তাকে থামাব না ; কিন্তু ভয় পেয়ো না। তাকে মাঝরাত পর্যন্ত প্রার্থনা করতে দাও, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাকে নিঃস্ব করবেন না।
ক্যাথলিন- হোয়াইট রকের কাছে সমুদ্র ভীষণ উত্তাল নোরা?
নোরা- মাঝামাঝি, হে ঈশ্বর আমাদের বাঁচান। পশ্চিমের বাতাসের শোরগোল যখন জোয়ার দিকে মোড় নেবে খুব খারাপ হবে। (সে বান্ডিল নিয়ে টেবিলের কাছে যায়)। এখুনি খুলব আমি?
ক্যাথলিন- সম্ভবত মা আমাদের দিকে নজর রাখবেন এবং ভিতরে আসবেন সবকিছু শেষ হবার আগেই।(টেবিলের দিকে আসছে)। দীর্ঘদিন পর আমরা দুজনেই খুব কাঁদব।
নোরা- (ভিতরের দরজার কাছে যায় এবং কান পাতে) মা বিছানার ওপর নড়াচড়া করছে। এক মিনিটের মধ্যে এখানে আসবে।
ক্যাথলিন- মইটা আমাকে দাও,  আমি ওগুলো চিলেকোঠায় জ্বালানির কাছে রেখে দেব, মা আদৌ ওগুলোর ব্যাপারে জানবে না, যখন জোয়ারের মোড় ঘুরবে মা তীরে দেখতে যাবে সে পশ্চিমে ভেসে বেড়াচ্ছে কিনা।
তারা মইটিকে চিমনির কোণে ঠেসিয়ে দেয়।ক্যাথলিন ক'পা উঁচুতে উঠে গিয়ে জ্বালানির কাছে লুকিয়ে দেয়। ম্যরিয়া ভিতরের ঘর থেকে আসে।
ম্যরিয়া- (ক্যাথলিনের দিকে তাকায় আর অদ্ভুতভাবে কথা বলে) জ্বালানি কি খুব কম পড়েছে?
ক্যাথলিন- একটা খাবার(কেক) আগুনে সিদ্ধ হচ্ছে আর কিছুক্ষণের ( জ্বালানির নীচে ছুঁড়ে দিয়ে), মধ্যে বার্টলে এটা চায়বে যখন জোয়ার  ঘুরবে সে কানমারার দিকে গিয়েছে কিনা।
ম্যরিয়া- (আগুনের সামনে একটি টুলে বসে) সে আজকে যাবে না বাতাস দক্ষিণ পশ্চিম থেকে উঠছে।  সে আজকে যাবে না, কারণ তরুণ পুরোহিত তাকে নিশ্চিত আটকিয়ে দেবে।
নোরা- তিনি তাকে থামাবেন না মা ; আমি শুনলাম ইমন সাইমন, স্টিফেন পেটি আর কলাম শন বলছিল সে যাবে।
ম্যরিয়া- সে কোথায়?
নোরা- সে এই সপ্তাহে অন্য বোট হবে কিনা দেখতে গিয়েছে, মনে হচ্ছে তার  ফিরতে খুব বেশি দেরি হবে না, কারণ জোয়ারের মোড় গ্রিন হেডের দিকে, আর পূর্বে গিয়ে হুকারের দিকে যাবে।
ক্যাথলিন- আমি শুনলাম কেউ কেউ বিগ স্টোন পেরোচ্ছে।
নোরা- (বাইরে তাকিয়ে) সে এখুনি আসছে , তাড়াতাড়ি।
বার্টলে- (ভিতরে আসে এবং ঘরের চারপাশে তাকিয়ে মনমরা ভাবে কথা বলে) ক্যাথলিন কানমারা থেকে যে নতুন রশাটা আনা হয়েছিল সেটা কোথায়?
ক্যাথলিন- (নীচে নামে) নোরা ওটা ওকে দাও, ওটা হোয়াইট বোর্ডের কাছে একটা পেরেকে ঝুলছে। আজ সকালে আমি ওটা টাঙিয়েছি, কারণ কালো পাওয়ালা শূকরটা ওটা খাচ্ছিল।
নোরা- (তাকে রশাটা দিয়ে) বার্টলে, এটা?
ম্যরিয়া- রশাটা বোর্ডের কাছে ঝুলতে দেওয়ায় ভালো হবে বার্টলে (বার্টলে রশা নেয়)।
ওখানে ওটা লাগবে আমি বলছি না তোমাকে, যদি মাইকেলের বিপদ হয়, আগামী সকালে বা পরদিন সকালে, অথবা সপ্তাহের যে কোনো সকালে; ঈশ্বরের করুণায় আমরা তাকে এই গভীর সমুদ্র থেকে তুলে আনব।
বার্টলে- (রশা দিয়ে কাজ শুরু করেছে) আমার কোন ফাঁস দেওয়া দড়ি নেই ঘোড়ায় চড়ার জন্য, আর এখুনিই যাব। এই বোটটাই দু সপ্তাহ বা বেশি দিনের জন্য যাচ্ছে, আর ভাড়া ঘোড়া গুলোর জন্য ভালোই কম, আমি শুনেছি।
ম্যরিয়া- তারা বলবেই ত তারা কমই বলবে যদি মানুষটা শেষ হয়ে যায়, আর সেখানে কফিন বওয়ার জন্য কেউ থাকবে না, পরে তোমাকে ভাল মূল্য দেব সবথেকে সুন্দরতম হোয়াইট বোর্ডের জন্য যখন কানমারায় তুমি খুঁজে পাবে।
সে বোর্ডের চারপাশে তাকায়।
বার্টলে- যদি এটা নষ্ট হয় কেমন হবে, আমরা নয় দিনের প্রতিটি দিন কেমন থাকব আর কিছুক্ষণ আগেই দক্ষিণ পশ্চিম দিকে দারুন হাওয়া বইছিল?
ম্যরিয়া- সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টি হচ্ছে, আর রাতে চাঁদের কাছে তারাটা নেই। যদি একশ বা হাজার ঘোড়া তোমার থাকত, তাহলে ওই হাজার ঘোড়া শেষ পুত্রের থেকে বেশি মূল্যবান হত কি?
বার্টলে- (ফাঁস এর কাজ করছে, ক্যাথলিন কে) প্রতিদিন দেখবে ভেড়ার দল শস্যক্ষেত্রে নামছে কি না,আর পাইকের এলে তুমি কালো পাওয়ালা শূকর বিক্রি করতে পার ভালো দাম পেলে।
ম্যরিয়া- ওর মতো একটা মেয়ে কিভাবে ভাল দাম পাবে?
বার্টলে- (ক্যাথলিনকে) যদি পশ্চিমা বাতাস পূর্ণিমা পর্যন্ত থাকে তাহলে তুমি আর নোরা শ্যাওলা নিয়ে আসবে।আজ থেকে আমরা কঠিনতার মুখোমুখি হব কারণ কাজ করার মতো পুরুষ আমি একাই আছি।
ম্যরিয়া- নিশ্চিত, আমরা নিশ্চিত  যে তুমি বাকিদের সাথে ডুবে যাবে। কিভাবে আমি বাঁঁচব আর মেয়েগুলো, আমি মৃত্যুর পথ পানে চেয়ে আছি।
বার্টলে ফাঁস দেওয়া দড়ি নামিয়ে রাখে, তার পুরনো কোট খুলে ফেলে, আর একই ফ্লানেলের নতুন একটা পড়ে নেয়।

বার্টলে- (নোরাকে) জাহাজ কি জেটির কাছে চলে এসেছে?
নোরা- (বাইরে তাকিয়ে) গ্রিন হেড পেরোচ্ছে আর
পাল ফেলছে।
বার্টলে- ( টাকার থলে আর তামাক নিয়ে) জাহাজে যেতে আমার হাতে এখনো আধ ঘন্টা সময় আছে, আমি দু দিনের মধ্যে চলে আসব, বা তিন দিন, বা বাতাস খারাপ হলে চারদিনও লাগতে পারে।
ম্যরিয়া- (আগুনের দিকে ঘুরে, শালের চাদর মাথায় নিয়ে) একজন বৃদ্ধা তাকে সমুদ্র যাত্রায় আটকাচ্ছে আর সে থামছে না এতটাই নির্দয় ও নিষ্ঠুর সে।
ক্যাথলিন- এটাই এক তরুণ ছেলের  জীবন , আর কে শুনবে এক বৃদ্ধার কথা যে একই জিনিস বারবার বলেই চলেছে।
বার্টলে- (ফাঁস দেওয়া দড়ি নিয়ে) আমি তাড়াতাড়ি র‌ওনা দেব লাল ঘোড়ায় চেপে আর ধূসর ছোট্ট ঘোড়া আমার পেছনে পেছনে ছুটবে..ঈশ্বরের আর্শীবাদ তোমাদের ওপর রইল ।
সে বেরিয়ে পড়ে।
ম্যরিয়া- (দরজা কাছে কাঁদে) বার্টলে এখন চলে গেছে, ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন, আমরা তাকে আর কখনো দেখতে পাব না। সে চলে গেছে, এখুনি কালো রাত্রি নামবে এই পৃথিবীতে আমার কোন পুত্র আর অবশিষ্ট থাকবে না।
ক্যাথলিন- কেন তাকে আর্শীবাদ দিলে না, (যখন)  সে দরজার দিকে চেয়ে আছে? এটা দুঃখের তুমি তাকে বাইরে পাঠিয়ে দিলে অপয়া কথা শুনিয়ে?
ম্যরিয়া সাঁড়াশি নেয় আর আগুন সরাতে শুরু করে চারপাশ না লক্ষ্য করেই।
নোরা- (মা'র দিকে ঘুরে) তুমি জ্বালানি সরিয়ে নিচ্ছো কেক থেকে।
ক্যাথলিন- (চিৎকার করে) ঈশ্বর পুত্র আমাদের ক্ষমা করুন, ভুলেই গিয়েছিলাম খাবার টুকু।
সে আগুনের কাছাকাছি আসে।
নোরা- কেকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বার্টলে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতেই থাকবে, যখন সূর্য ডুবে যাবে সে কিছুই খেতে পাবে না।
ক্যাথলিন- (উনুন থেকে কেক নামিয়ে) নষ্ট হয়ে গেছে নিশ্চিত। এই বাড়িতে কারোর হুঁশই থাকে না যখন একজন বৃদ্ধা মানুষ অনন্তকালের জন্য কথা বলে।
ম্যরিয়া তার বসার জায়গায় কেঁপে ওঠে।
ক্যাথলিন- (রুটির কিছুটা অংশ কেটে একটা কাপড়ে মুড়ে, ম্যরিয়ার দিকে) এখন তুমি স্প্রিং ওয়েলের দিকে যাও, তাকে কেকটা দাও, চলে যাবার আগে। তাহলে তোমার সাথে বার্টলের দেখা হবে  আর অভিশাপ কেটে যাবে, আর তাকে বলবে ঈশ্বর তোমাকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দিক যাতে সে নিজেকে হাল্কা মনে করবে।
ম্যরিয়া- (রুটি নিয়ে) আমি কি তাড়াতাড়ি ফিরতে পারব?
ক্যাথলিন- যদি তুমি তাড়াতাড়ি যাও তাহলে।
ম্যরিয়া- (অবিচলিত হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে)  কঠিন ব্যাপার আমি হাঁটব।
ক্যাথলিন- (মা'র দিকে চিন্তিত ভাবে তাকিয়ে) নোরা মাকে লাঠি দাও না হলে তিনি বড় পাথরে পিছলে পড়ে যাবেন।
নোরা- কোন লাঠি?
ক্যাথলিন- যে লাঠিটা মাইকেল কানমারা থেকে এনেছিল।
ম্যরিয়া- (লাঠি নিয়ে) বড় পৃথিবীতে বুড়ো মানুষেরা তাদের ছেলে পুলেদের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতেই থাকে কিন্তু এই জায়গায় তরুণ লোকেরা ত্যাগ করে তাদের জন্য যারা বুড়ো।
সে ধীরে সুস্থে প্রস্থান করে।  নোরা মই-এ ওঠে।
ক্যাথলিন- নোরা অপেক্ষা করে হয়ত সে এক্ষুণি ফিরে এলো।  তার দুঃখ হয়, ঈশ্বর তাকে সহায়তা করুন, তুমি ভাবতেও পারবে না  সে কি করে বসবে।
নোরা- মা কি ঝোপের কাছে চলে গেছে?
ক্যাথলিন- (বাইরে তাকিয়ে) এখন চলে গেছে। তাড়াতাড়ি ওটা নীচে ছুঁড়ে দাও, কারণ ঈশ্বরই জানেন মা কখন আবার এখানে চলে আসেন।
নোরা- (চিলেকোঠা থেকে বান্ডিল নিয়ে) তরুণ পুরোহিত বলেছেন আগামীকাল তিনি পাড়ি দেবেন
,আমরা গিয়ে তার সাথে কথা বলতে পারি যদি নিশ্চিত সেগুলো মাইকেলের হয়।
ক্যাথলিন- (বান্ডিল নিয়ে) তিনি কি বলেছিলেন কোন দিকে জামা মোজা পাওয়া গিয়েছিল?
নোরা- (নীচে এসে) পুরোহিত বলেন সেখানে দুজন লোক ছিল আর তারা আইরিশ মদ খেয়ে দাঁড় টানছিল কক্স ক্রাউডের সামনে সেইসময় দেহটা তাদের একজনের দাঁড়ে ঠেকে, যখন উত্তরের কালো খাঁড়ি অতিক্রম করছিল।
ক্যাথলিন- (পুঁটলিটা খোলার চেষ্টা করে) আমাকে একটা ছুড়ি দাও নোরা সুতোটা নোনা জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর একটা কালো খুঁট আছে যেটা তুমি এক সপ্তাহেও খুলতে পারবে না।
নোরা- (তাকে একটা ছুড়ি দিয়ে) আমি শুনেছি এটা ডাংগলের দীর্ঘ রাস্তায়।
ক্যাথলিন- (সুতো কাটছে) নিশ্চিত ওটাই। কিছুক্ষণ আগে এখানে একটা লোক ওই ছুড়িটা আমাদের বিক্রি করল---আর সে বলছিল যদি তুমি হেঁটে যাও পাহাড়ের ওপারে প্রায় সাতদিন লাগবে ডাংগলে যেতে।
নোরা- আর কতক্ষণ সময় লাগবে একটা লোকের যদি সে ভাসে?
ক্যাথলিন বান্ডিল খুলে জামা আর মোজার একটু খানি বের করে। তারা সেগুলোর দিকে আগ্রহী ভাবে তাকিয়ে থাকে।
ক্যাথলিন- (গলার স্বর নামিয়ে) নোরা ঈশ্বর রক্ষা করুন কেমন একটা অদ্ভুত লাগছে না এইগুলো তার?
নোরা- হুক থেকে তার জামা পেরে আমরা একটা ফ্লানেলের সাথে আর একটা মিলিয়ে দেখতে পারি।( সে কোণে ঝুলতে থাকা কিছু জামা কাপড়ের দিকে দেখতে থাকে। আর একটা ওখানে নেই ক্যাথলিন, কোথায় ওটা?
ক্যাথলিন- আমার মনে হচ্ছে বার্টলে ওটা সকালে পরেছে কারন তার জামা নুনে ভারী হয়ে গেছে।
(কোণের দিকে নির্দেশ করে) ওই দস্তানার খানিক অংশ একই জিনিসের। ওটা দাও আমাকে।
নোরা ওটা তাকে দেয় এবং তারা ফ্লানেল তুলনা করে।
ক্যাথলিন- এটাও একই উপাদানের নোরা ; গলওয়ে দোকানের প্রচুর পরিমাণের ওইগুলো নয় কি, আর অন্য লোকেরও তো হতে পারে?
নোরা- (মোজাগুলো নিয়ে সেলাই গুনতে গুনতে চিৎকার করে) এটা মাইকেলের, ক্যাথলিন এটা মাইকেলের; ঈশ্বর তার আত্মাকে রক্ষা করুন, আর মা কি বলবে যখন সে শুনবে এই ঘটনা আর বার্টলে সমুদ্রে?
ক্যাথলিন- (মোজা নিয়ে) এটা একটা সাধারণ মোজা।
নোরা- তিন জোড়ার দ্বিতীয় এটা যেটা আমি বুনেছিলাম আর তিন কুড়ি সেলাই করেছিলাম, আর আমি তাদের চারটেই সেলাই করেছিলাম।
ক্যাথলিন- (সেলাই গোনে) অতগুলো সেলাই-ই এখানে আছে (চিৎকার করে)। ও নোরা, এটা কি খারাপ নয় সে ভাসছে সুদূর উত্তরের দিকে, আর তাকে কেউ দেখছে না কেবল অলক্ষুণে ডাইনি ছাড়া যে সমুদ্রে উড়ে বেড়াচ্ছে।
নোরা- (জামার ওপর হাত গুলি ছুড়ে দিয়ে)। এটা কি করুনাময় ব্যাপার নয় তার মতো একটা লোক আর নেই যে ভাল চালক আর জেলে ছিল কেবলমাত্র আছে তার পুরনো জামা আর সাধারণ একটা মোজার সামান্য অংশ?
ক্যাথলিন- (কিছুক্ষণ পর) বলো নোরা মা আসছে কি না?কিছু আওয়াজ শুনছি।
নোরা- (বাইরে তাকিয়ে) ক্যাথলিন মা।মা দরজার কাছে চলে এসেছে।
ক্যাথলিন- আসার আগে জামাগুলো সরিয়ে রাখ। হতে পারে খুব আরামেই বার্টলেকে মা আর্শীবাদ দিতে পেরেছে আর যা আমরা শুনেছি সে সমুদ্রে ভাসছে মা'কে জানাব না।
নোরা- (ক্যাথলিনকে সাহায্য করে বান্ডিল গোটাতে)। জামা-কাপড় গুলো কোণে রেখে দিচ্ছি।

তারা জামা-কাপড় গুলো একটা চিমনির মধ্যে রেখে দেয়, ক্যাথলিন তার চরকায় ফিরে যায়।
নোরা- মা কি দেখে ফেলবে আমি কাঁদছিলাম?
ক্যাথলিন-  তোমার পিঠ দরজার দিকে রাখ যাতে তোমার ওপর আলো না পরে।
নোরা চিমনির কোণে বসে, পিঠ দরজার দিকে করে। ম্যরিয়া ধীরে ধীরে ভিতরে এসে, মেয়েদের দিকে না তাকিয়ে আগুনের কাছে মোড়ার অন্য ধারে যায়। রুটি- জামা এখনো তার হাতেই আছে। মেয়েরা একে অপরের দিকে তাকাতাকি করে। নোরা রুটির বান্ডিলের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ক্যাথলিন- (সুতো কাটার পর) তুমি তাকে রুটি দাও নি?
ম্যরিয়া কোমলভাবে তাকায়, সোজাসুজি না ঘুরেই।
ক্যাথলিন- তুমি কি তাকে বোটে চড়তে দেখেছিলে?
ম্যরিয়া তাকাতেই থাকে।
ক্যাথলিন- (একটু অসহিষ্ণু হয়ে) ঈশ্বর তোমাকে ক্ষমা করুন ; চুপ না থেকে কি দেখেছ বলো শোক না করে। তুমি কি বার্টলে কে দেখেছ?.আমি তোমাকেই বলছি।
ম্যরিয়া- (নিম্ন কন্ঠে) আমার বুক ভেঙেছে আজ থেকে।
ক্যাথলিন- (আগের মতোই) তুমি কি বার্টলেকে দেখেছিলে?
ম্যরিয়া- আমি ভয়ংকরতম জিনিস দেখলাম।
ক্যাথলিন- (চাকা ছেড়ে বাইরে তাকায়) ঈশ্বর তোমাকে করুণা করুন; সে এখন গ্রিন হেডের কাছে ঘোড়ায়, আর ধূসর টাট্টুঘোড়া তার পেছনে।
ম্যরিয়া- (কাঁদতে আরম্ভ করে শালের চাদর মাথা থেকে খসে পড়ে তার সাদা চুল দুলতে থাকে। ত্রস্ত ও কম্পিত স্বরে) টাট্টুঘোড়া তার পেছনে.....
ক্যাথলিন- (আগুনের কাছে আসে) কি তোমাকে ঝামেলায় ফেলল?
ম্যরিয়া- (আস্তে আস্তে বলে) আমি সবথেকে ভয়ংকরতম জিনিস দেখলাম  যে দিন ব্রাইড ডারা তার ছেলের মৃতদেহ কোলে।
ক্যাথলিন আর নোরা-- উঁহহ..।
তারা হামাগুড়ি দিয়ে আগুনের কাছে বৃদ্ধা মায়ের সামনে যায়।
নোরা- বলো ত তুমি কি দেখেছ?
ম্যরিয়া- আমি মাইকেলকে দেখলাম।
ক্যাথলিন- (কোমলকন্ঠে) তুমি দেখ নি মা। ওটা মাইকেল ছিল না কারণ তার দেহ উত্তরে খুঁজে পাওয়া গেছে, আর সে সম্পূর্ন কবরস্থ ঈশ্বরের করুণায়।
ম্যরিয়া- (একটু অবজ্ঞার সাথে)। আমি তাকে দেখেছি আর সে চড়তে চড়তে ঘোড়ার গতি বাড়ছিল। বার্টলে প্রথমে লাল ঘোড়ায় চড়ে এল, আর আমি বলতে চাইলাম ঈশ্বর তোমাকে সাফল্য প্রদান করুন,কিন্তু কিছু একটা আমার কন্ঠের শব্দ রুদ্ধ করে দিল। সে তাড়াতাড়ি চলে গেল; আর সে বলল ঈশ্বরের আর্শীবাদ তোমার ওপর রইল, আমি কিছুই বলতে পারলাম না।তারপর দেখলাম মাইকেল ধূসর ঘোড়ার পিঠে চড়ছিল গায়ে নতুন জামা কাপড়, পায়ে নতুন জুতো।
ক্যাথলিন- (তীক্ষ্ণচোখে দেখছিল) আজ থেকে আমরা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেলাম, সম্পূর্ণ শেষ।
নোরা- তরুণ পুরোহিত কি বলেননি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কোন সন্তান না বাঁচিয়ে তাকে একা করতে?
ম্যরিয়া- (নীচু কন্ঠে, কিন্তু পরিষ্কার করে) তিনি সমুদ্র সম্বন্ধে কিছুই জানেন না....বার্টলে এখন হারিয়ে যাবে, ঈমন কে ডাক আর হোয়াইট বোর্ড দিয়ে একটা ভাল কফিন তৈরি করতে বলো আমার জন্য, কারণ তাদের পরে আমি আর বাঁঁচব না। আমার স্বামী ছিল, স্বামীর বাবা, আর এই বাড়িতে ছ'টা ছেলে ছিল ----ছ'টা সুপুরুষ,  যদিও তাদের প্রত্যকের জন্ম একটা কঠিন সময়েই, তারা পৃথিবীতে এসেছিল -- আর তাদের কিছুজন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল আর কিছুজন পাওয়া যায়নি কিন্তু তাদের সকলেই এখন আর নেই....স্টিফেন আর শন প্রবল ঝড়ে হারিয়েছিল, আর গোল্ডেন মাউথের গ্রেগরি উপসাগরে তাদেরকে পরে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, একটি পাটাতনে তাদের দুজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল দরজার সামনে।
এক মুহূর্তের জন্য সে থামে, মেয়েরা শুরু করে যেন তারা আধখোলা দরজার  বাইরে কিছু একটা শুনতে পেয়েছে।
নোরা- (চুপিচুপি) ক্যাথলিন শুনলে তুমি? উত্তর-পশ্চিমের গোলমাল শুনলে?
ক্যাথলিন- (চুপিচুপি) তীরে একজন কেঁদেই চলেছে।
ম্যরিয়া- (কোনোকিছু না শুনে, একইভাবে) শিমাস আর তার বাবা,আবার তার নিজের বাবাও, এক অন্ধকার রাত্রে হারিয়ে গিয়েছিল, আর তাদের লাঠির বা কোনো কিছুর চিহ্নই পাওয়া যায়নি। প্যাচ বড় ডিঙি উল্টিয়ে ডুবে গিয়েছিল। আমি এখানে বার্টলের সাথে বসেছিলাম, সে তখন দুধের শিশু আমার দুই জানুর ওপর শুয়ে আছে, আমি দেখলাম দুটো মহিলা, তিনটি মহিলা, চারটি মহিলা ভিতরে আসছে তারা একে অপরকে অতিক্রম করছে কোন কথা না বলে।তারপর দেখলাম বাইরে লোকেরা একে একে আসছে আর তারা লাল পালের অর্ধেকের একটা বস্তু ধরেছে, তার মধ্যে থেকে জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে--এক খরার দিনে--আর দরজায় একটা চিহ্ন রেখে দেয়।
সে পুনরায় থামে দরজার দিকে হাত পা ছুঁড়ে দিয়ে।দরজা আলগা হয়ে যায় আর বৃদ্ধারা আসতে থাকে চৌকাঠে একে অপরকে অতিক্রম করে আর হাঁটু মুড়ে বসে তাদের মাথার ওপরে লাল শায়ায় জড়ানো মঞ্চের সামনে।
ম্যরিয়া- (অর্ধেক স্বপ্নে ক্যাথলিনকে) এটা প্যাচ, মাইকেল, আসলে কে এটা?
ক্যাথলিন- মাইকেলকে খুঁজে পাওয়া গেল সুদূর উত্তরে, যখন তাকে পাওয়া গিয়েছিল সেখানে কি ভাবে সে এখানে এল?
ম্যরিয়া- তরুণ দের নিশ্চয় জলে চারিদিকে ভেসে থাকার এক ক্ষমতা আছে, তারা কিভাবে জানল এটা মাইকেলই বা তার মতই কেউ, কারণ যখন এক মানুষ ন'দিন ধরে সমুদ্রে, বাতাস বইছে, খুবই কঠিন ব্যাপার লোকটা কে ছিল তার নিজের মাও বলতে পারবে না।
ক্যাথলিন- এটা মাইকেল ঈশ্বর তাকে রক্ষা করুন, কারণ তারা সুদূর উত্তর থেকে মাইকেলের জামা কাপড়ের খানিকটা পাঠিয়েছিল।
সে নাগালের মধ্যে যায়, মাইকেলের জামা কাপড় মা কে হাতে দেয়। ম্যরিয়া ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়, সেগুলো তার হাতে নেয়, নোরা তাকিয়ে থাকে।
নোরা- ওগুলোর মধ্যে আর একটা জিনিস তারা এনেছিল, এর ভেতর দিয়ে জল চুঁইয়ে পড়ছিল, বিগ স্টোনের কাছে এক চিহ্ন ছেড়ে যায়।
ক্যাথলিন- (চুপিচুপি মহিলাদের কে এসেছিল) বার্টলে ছিল ওটা?
মহিলাদের একজন। ওই ছিল নিশ্চিত, ঈশ্বর তার আত্মা শান্তিতে রাখুন।
দুই যুবতী মহিলা ভেতরে এলেন টেবিল টানলেন। তারপর লোকেরা বার্টলের দেহ এক পাটাতনে রেখে, খানিকটা পালের অংশ দিয়ে, টেবিলে রেখে, আনতে শুরু করল।
ক্যাথলিন- (মহিলাদের যখন তারা এমনটা করছিলেন)  কিভাবে সে ডুবে গেল?
মহিলাদের একজন। ধূসর টাট্টুঘোড়া তাকে সমুদ্রে উল্টিয়ে দিয়েছিল আর সে শেষ হয়ে যায় যেখানে হোয়াইট রকের কাছে বিরাট ফেনা আছে।
ম্যরিয়া টেবিলের কাছে গিয়ে( টেবিলের মাথার দিকে) হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে। মহিলারা বিলাপ করছিল মৃদুভাবে আর তাদেরকে হাল্কা দোলাচ্ছিল ধীর গতির আন্দোলনের  সাথে। ক্যাথলিন আর নোরা টেবিলের অন্য দিকে। লোকেরা হাঁটু মুড়ে দরজার কাছে বসেছিল।
ম্যরিয়া- (তার মাথা তুলে বলছিল যেন সে তার চারপাশের লোকজন দেখতেই পাচ্ছিল না।) তারা সবাই চলে গেছে এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই যে সমুদ্র আমার আর ক্ষতি করবে...

আমাকে আর রাতে কেঁদে প্রার্থনা করতে হবে না যখন দক্ষিণী বাতাস বইবে আর পূর্বের ফেনিল-তরঙ্গ, পশ্চিমে, দুই আওয়াজে ব্যাপক আলোড়ন ঘটাবে, আর একে অপরের ওপর আছড়ে পড়বে।আর কাউকে বারণ করব না সমুদ্রে যাবার সামহান থেকে রাতে পবিত্র জল আনতে, আর গ্রাহ্য করব না সমুদ্রে যখন অন্য মহিলারা বিলাপ করবে (নোরা কে)। আমাকে পবিত্র জল দাও নোরা; এখনও কিছুটা তরল আছে ড্রেসারে।
নোরা তার মাকে পবিত্র জল দেয়।
ম্যরিয়া- (জল ছিটায় মাইকেলের জামা কাপড় বরাবর বার্টলের পা দিয়ে, তার ওপরেও পবিত্র জল ছিটিয়ে দেয়।) বার্টলে এমন নয় যে আমি ঈশ্বরের কাছে তোমার জন্য পার্থনা করি নি। অন্ধকার রাত্রেও( যখন তুমি বাড়ি ফিরতে দেরি করতে এমন নয় যে আমি তোমার জন্য প্রে করিনি) আমি তোমার জন্য প্রার্থনা করেছি  যখন তুমি জানতে না যে আমি কি বলব; কিন্তু নিশ্চিত এখন থেকে চরম শান্তি পাব। এখন চরম শান্তি পাব আর বড় বড় রাতে প্রচুর ঘুমোবো
সামহানে, যদিও আমাদের ভিজে আটার অংশই খেতে হবে, আর হতে পারে একটা পচা গন্ধওয়ালা মাছ।
সে পুনরায় হাঁটু মুড়ে,পেরিয়ে যায় নিজেই চুপিচুপি পার্থনা করতে করতে।
ক্যাথলিন- (এক বৃদ্ধ লোককে) যখন সূর্য উঠবে তুমি আর ঈমন একটা কফিন বানাবে।  আমাদের সুন্দর হোয়াইট বোর্ড আছে তার জন্য, ঈশ্বর তাকে সহায়তা করুন, ভাবছি যদি মাইকেলকে পাওয়া যেত, আর তোমাকে একটা নতুন কেক দিতাম তুমি খেতে যখন কাজ করতে।
(বৃদ্ধ লোকটা বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে।) ওগুলোর সাথে পেরেক আছে?
ক্যাথলিন- কলাম না নেই; পেরেকের সম্বন্ধে আমরা ভাবিনি।
অপর লোক- এটা বিশাল অবাক করা ব্যাপার /বিষয় সে পেরেক সম্বন্ধে জানেই না, আর সব কফিনগুলো বানানো দেখেছে।
ক্যাথলিন- মা এখন বৃদ্ধ হচ্ছে আর সে শোকার্ত।
ম্যরিয়া খুব ধীরে উঠে দাঁড়ায় আবার আর মাইকেলের জামার টুকরোগুলো ছড়িয়ে দেয় দেহের পাশে পাশে, হলি ওয়াটারের বাদ বাকিটা তার ওপর ছিটিয়ে দেয়।
নোরা- (চুপিচুপি ক্যাথলিনকে) মা এখন চুপচাপ আর শান্ত ; কিন্তু যেদিন মাইকেল ডুবে গেছিল তুমি তাকে কাঁদতে শুনেছিলে এখান থেকে স্প্রিং ওয়েল পর্যন্ত। মাইকেলকে মা খুব ভালবাসত, ওটা কি কেউ ভাবতে পেরেছে?
ক্যাথলিন- (ধীরে, স্পষ্ট করে) এক বৃদ্ধা মানুষ সে যা'ই করুক তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে, নয় দিন কি যথেষ্ট নয়, মা কেঁদেছে আর বিলাপ করেছে, আর প্রচুর দুঃখ করেছে?
ম্যরিয়া- (শূন্য কাপ টেবিলের নীচে রাখে আর বার্টলের পায়ের কাছে হাত দুটি জড়ো করে।) তারা সবাই এখন একসাথে, আর শেষটাও ঘনিয়ে এসেছে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বার্টলের আত্মাকে কৃপা করুন, আর মাইকেলের আত্মাকে, শিমাস, প্যাচ, স্টিফেন, শন(মাথা ঝুঁকিয়ে) ; আর আমার আত্মার ওপর, নোরা আর এই পৃথিবীতে যারা বেঁচে আছে তাদের প্রত্যকের আত্মাকে।
মা থামে শোক ও কান্না জোরে হতে থাকে মহিলাদের, তারপর  ডুবে যায়।
ম্যরিয়া- (একই ভাবে) মাইকেল সুদূর উত্তরে ভাল সমাধি পেয়েছে, ঈশ্বরের করুনায়। বার্টলে হোয়াইট বোর্ডের একটা ভাল কফিন পাবে, আর গভীর সমাধি। এর থেকে অধিক আমরা আর কি চাইতে পারি? কোন মানুষই আদৌ চিরকাল বাঁচতে পারে না, এতেই আমাদের সন্তুষ্ট হতে হবে।
সে আবার হাঁটু মোড়ে আর পর্দা নেমে আসে ধীরে ধীরে।


©️ Suman Das

Monday 6 April 2020

"Body"

This body is for two days
You are of yore days
We all are energetic, of semen
But I am nothing to you
To such a bulk of shape
Being called divinely by
The sacred hearts under thy current
How can you stay blessed so murdering

I am the seeker, I am the path finder
The sprinkles have been stopped
We are not getting drenched
In the shade of grace and beauty.

"Trees with Silent Soul"

Balai, now, is in nostalgia
And his compassion into, now, road
What if they be ruined?
"No more an inauspicious word"

A seed now is nice Eden
Should not be there an Apple tree of emotion?
A calmness will spread through you
"No, there be not a desert"

How much I love you
Who, be there to tell you?
Selfish axed men earns.... and
Much more grey pervades the entire

Every tree is celestial
They are pretty good limned in it
What if be of human beings?
Where you find Oxygen?

Sunday 5 April 2020

"Smoke"

Half-burned heap of hay by the pond
Watching the yellowish smoke on
Yellow leaves falling down beside it
The air is blowing towards me

Dense water quitted to image sky
The blue has been doing under it
Astonished thinking caught in me
He is adoring for bad in the area

Where everybody is mesmerized
All want good from top to bottom
Shivering winds pierce not them
Evil spirits prying from their cheek

Where few are left with benevolence
Children under this circumstance growing
People splitting them for wealth
Cutting trees for the amusement 

Affections uprooted in human being
Where trust has no validity
Pushing them towards death
Weak persons are alike weeds.

Saturday 4 April 2020

"Village-Night"

Village-Night (2)

Is it that time?
We assemble together, boys?
What an amazement being here!
Let stories be unfolded
Kindle the fire from the hay-store
Such an ecstatic darkness
Never to be founded
Let the music blow on
There be no night where our Boyhood be replaced?
Oh the magic air cages us to coat
Let the bottle be sucked
Dance inside the ashes falling down
Oh lord keep us blessing
Remember the cook for eatables
Why does not this night come each day?
Why we cannot get back all those days?

Friday 3 April 2020

"Village-Night"


What would be the time?
So solemn a place never be found
So peaceful a sleep they do
Here, in the air a magic rests
One be cheap if one let it go
Untouched
Here, dark night is phenomenon
Fear, free, attack one unconceived
As lights on here and there
Be rustic if they let him go unnoticed
Be seated by the fireplace to chat.

Thursday 2 April 2020

"Waves"

Waves are still there
Why do they divert my mind?
Why are you phenomenal?
Why do you make me single?

All the thoughts become lull
Silent ups and downs continue
Nobody pays heed to...
Each eyes on its own way

Clothes coupled with sweat dust
Does be always fade under light
World's most happiest man fails to
The motion inside it takes me away

When Sun is to be hidden and rays
No artificial could be instead of it
Ripples be furious deafening more
Then silence not be there only roar.

Tuesday 31 March 2020

"আজ প্রেমিক হবার অবসর এসেছে"



আজ প্রেমিক হবার অবসর এসেছে
কুসুমিত মন, পলাশ বন, জোয়ারে ভেসেছে
রক্ত ছড়ানো পথে যদি দেখা যায় ফোনে
ঝড়বে ঝড়ুক কৃষ্ণচূড়া মনের এক কোণে 

একটি নৌকা নেব, যেখানে একটি নদী আছে পড়ে
একটু আবির নেব বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে
সব পাখি উড়ে যাক অতি উচ্ছৃঙ্খলে
তুমি আমি বসে থাকি বসন্তের কোলে

সব ছেলে ঘরে ফেরে ডুবে অন্ধকারে
কপালে যে হানিছে আঘাত প্রতি বারে
হয়ত কাউকে হৃদয়‌ই করেছে সে
আজ প্রেমিক হবার অবসর এসেছে।।

"হত্যাজীবি"

আমার হৃদয় কাঁদছে ঐ শ্যাওলা মাখা ঘর
অপেক্ষায় গাছ মাটিতে পড়ে বয়েছে ঝড়

চন্ডাল মৃত দাহর পরেও
ঐ বেদনা কমে না বাড়েও

প্রকাশ্যে বাঁচে হত্যাজীবি কথাও বলি
যখন হাঁটি বর্ধমানের অলিগলি

হয়ত সে পকেটে রেখে একটি ছিল
গোড়ালিতে আটকানো বিশাল এক হিল ‌।।


"On Love"

1)

I know this is her hair
She dresses her hair this way

I know it is she
Sitting before me in bus

When she used to sit in lap

I can tell how her eyes look like
I can tell how her skin feels like
I can tell what is stopping herself

The beauty behind her skin
Has become morphine

I know she would be good wife.


2)

She is concealing herself
From my age, love, and poverty

Like a snail coiling her sensitivities
From all the stimulating world

A cartoon's character and
Loves her pet

She has turned a big girl
And belly like earth
Tomorrow the second monsoon
She to be given birth.


3)

I cannot kiss you
Not on lips, forehead, hands

Excuse me
Please keep distance from me

I can be proved dangerous for you
Real this world once proved our view

Nobody is going to live like God
Still you have to be lord

We must be resisted by a glass
And cage myself in memory of flash.

"নয় বছর"

"নয় বছর"





প্রাণ আটকেপড়েছেছোট্ট ঘরে
তোমাকে সত্যি খুব মনে পড়ে
নয় বছরের কষ্ট আজ‌ও বুকে চাপা
পূর্ণ মান শূন্য গেছে হয়ে মাপা

আজ‌ও বাঁচি স্বাধীনতার বাণী বুকে বয়ে ।।

Monday 30 March 2020

"22 March"

"22 March"

All roads are clear and vacuum
Still striding over painfully
So much tranquil never seen
Buses stopped
Trains lifted
There is nothing to annoy the natural sound
All brains are oddly blank
A halcyon comes piercing us.

Poem

"Rain"


Look at the rain
Falling stone in vain
Who did it throw
Must be a crow
Taking its feed
Did not hide

A corrugated retheme is on
Stop them melting not to gone
Unconscious they spread glee
Keep yourself absolute not to flee

Love for particles instantly come and go
Then a saddening river keeps passing flow
The eternal desire keep you intact
However we avoid this defeaning fact

Keep tracking us
Heart of enormous
Keep your eternal instant being
It is I and you who exchanged ring.