Friday 13 November 2020

রোগ

অদূরে ঐ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেমিকার মত নিবিড় হতে চায় না 

ইতিমধ্যে গান না শুনে কান আমার খিটখিটে 

ব্যথায় কাঁপছে ত্বক 

আড্ডা ঠেক হাতছানি দিয়ে ডাকে 

বাড়ির ছাদে মাল্টি স্পেসালিটি হাসপাতালটি গোলাপ গাছ হয়ে বেরোলে 

শব্দ অভিধানের মত বুর্জোয়া রোগ 

এই বিশাল হৃদয়ে শরীরে 

বেকনীয় চিকিৎসায় ছুড়ে ফেলে দেব ।


মিসড কল হতে পারব না মোবাইলের 

অথবা কন্ঠস্বরের প্রিয় শব্দ 

যদি মুখ চাওয়া চাওয়ি করে মরে যেতে হয় 

তবে তা-ই স্বীকার্য।।


দেহ

 তোমার দেহ গাছের পাতা ঘন সবুজ 

চিরস্থায়ী চোখের মতো 

প্রসারিত নয় সঙ্কুচিত নয় 

তবুও সদ্যস্নাত সতেজতার আবেশ 

কুসুমিত থাকার ভীষণ সংযম 

নির্বানের পথে নয় 

চিরস্থায়ী পথে 


দেহ দেবতাদের মতো 

সহজাত প্রবৃত্তি নিভিয়ে রেখেছে তা 

বল্গাহীন ছুটে চলেছি স্রোতের মুখে 

টুকরো টুকরো 


এই অস্তিত্ব ষড়রিপুর জন্য 

এই অস্তিত্ব তিন গুণের জন্য 

এই অস্তিত্ব সত্তার জন্য।

পঙ্গপাল


বাউলের একতারার শব্দে পালিয়ে যেতে পারতে 

এক মুঠো দানা ছেড়ে যাওয়ার ছিল কি প্রয়োজন?

বেদনার স্মৃতি বুনে দিয়ে যায়, শোষণ 

উচ্ছিষ্ট মাছের কাঁটার কঙ্কালসারির মতন।


চলে গেছে এই পীড়া অন্য দেশের ভিতর 

বুকের ভেতর এখনো ওড়ে ওরা।

বুঝি শৈবালরেখা করে দেয় প্রাচীর 

সময়ের ভিতর কপাল গেছে পোড়া।

গাছ রমণী

 তোমার শরীরে শাখা প্রশাখায় জোনাকি জ্বলে 

ভিজে গেছে পায়ের তলার মাটি 

স্মৃতি ঝরে টুপটাপ 

নিভে যেতে যেতে চলে যায় অন্যত্র 


পিকনিক বসে এখানে

ফয়সাল‌ও হয় 

বক্তৃতার শরৎকাল ফোটে 

আমি বাড়ি আঁকি তোমার ছায়ার তলে 

ওষুধ নেই ঘরে


রোগ রাখার জায়গা আছে ঘরে, ওষুধের নেই
বিছানায় তোষক আছে, ওষুধের সেই।
কিছু সময়ের সঙ্গী সাথী বছর খানেক রোগ
ইচ্ছা পূরণ অনেক বাকি শুরু থেকে দুর্ভোগ।
এই বছরের শেষে কি হবে কি জানি
উত্তরোত্তর পর্বে ভাঙবে কি ভরসা খানি?
কলরোল, মিথ্যাচার, অকাল্পনিকে শহর আছে ভরে, ওষুধের নেই
অনেক লোক পদে আছে, কিছু বিপদে, ওষুধের সেই।

ঝড় কেটে গেলে


একদিন ঝড়ের পরে নীল আকাশ দেখার সৌভাগ্য হবে মানুষের মন, হৃদয়, চামড়ায় 

ঘাঘড়ার মতো পাপড়ি উঠবে ফুটে

ডুইকার হরিণের আগুনে পোড়ানো মাংস! 

স্কয়ার ফেস জিনের একটি বোতল! 

এক আধ চুমুক তখন আমার চুমু খাওয়া দুই ঠোঁটে--- গলায়---- পেটে 

চমৎকার মানুষ আমি 

বিশ্বশ্রেষ্ঠ বাচাল 

অসম্ভব ঠান্ডা--- ভিজে চুপচুপে--- রাত 

যদি পাওয়া যেত শুকনো কাঠ 

উম আগলে রাখা হত শরীরে 

হোক না তবুও ঘুণে খাওয়া 

পিঁপড়েদের‌ও বাস 

আনন্দ উঠবে জেগে পাখিদের ধুলোমাখা ডানায় 

এই জগৎ মৃন্ময়, চিন্ময়, পূর্ণ হোক কানায় 

একটু একটু করে ত্রিকূট পাহাড়, চিল্কা হ্রদ 

দিনের আলোর মতো অন্ধকার এসেছে নেমে 

দলপতিও উদ্বাস্তু নয় আছে ঘর এসেছে থেমে 

শেষ গন্তব্য লাইট হাউসের‌ই পথে আবেগের ছায়াতলে মিলিয়ে যাবে বহু সুর এই চেয়ে 

শূন্য জানালা দুয়ার জটলা পেতে হাট বাজারের মতো মনে হয় এ নৈমিষারণ্য বড়োই একঘেয়ে 

ছোট হয়ে এলো এই মুহূর্তে চোখের উচ্চতা 

লোকের ছেলেদের বিয়ে হবে না কো আর 

লুকিয়ে না রেখে এ বোতল দিয়েছি খুলে 

আনন্দে চিৎকার করে উঠি বারবার।

এই আছো এই নেই


গ্ৰিলের কাছেই ছিলে দাঁড়িয়ে, আকাশ তখন মেঘ শূন্য, চলে গেছিলাম দেখেই, ঠাকুর দেখার মতো।


তুমি ছিলে না ভিখিরি,

তুমি ছিলে না মাঝির ব‌উ,

অথবা কোন বিক্রেতা ওয়ালী,

পাশের বাড়ির কোন বিবাহিতা। 


এমনি উঠেছিল ঝড়, যেমনি সবার আসে 

ফিরতে চাওয়ার তাড়া ছিল না তোমার 

কুকুরের দল ছিল না পাড়ায়, কোন মাসে 

উঠে নাই ঝড়, অথবা যদি নামে অন্ধকার।


বাড়ি

 আমার‌ই আছে মুখ-- আর যাদের আছে ভাষা কিছু বুঝি না 

বাড়ি, পথ, রাস্তা নেই মুখ তাই লিপি খুঁজি না।


কিছু ইতিহাস হয়েছে তৈরি, স্বার্থের‌ই লোভে 

তাঁত এখনো ক্ষত শূন্য তাঁতিই শুধু ডোবে।


নাড়ি নেই নেই প্রাণ--- যা আছে শুধু আমার 

একটি বাড়ি কথা বলে শুনি না আমি আর।

কঠিন তপস্যা

কঠিন তপস্যা, তবুও মনে হয় ছেলেখেলা 

পার্কেই বসে আছি চুপ 

কান্না-- হৃদয়ের কেঁদে যাচ্ছি খুব 

পার হতে হবে সময়ের ভিতরকার বারবেলা।

আমি বসে থাকি চুপ 

কিছুই নেইকো খাবার, কিছুই নেইকো করার 

অনেকেই থাকতে না পেরে যাচ্ছে মরে 

অবিচলিত রূপ।

ঘর বাড়ি, পাকা রাস্তা, মাঝে মাঝে, গাছ দেখি চোখে 

কে মরল, কে বাঁচল আমার কি আসে যায়।

আমার‌ও অনেক কাল করার কিছুই নাই 

পেরেছি কি হতে জগ্যি এ বিষাদের‌ নোখের?

চোখ বুজে আসে



উর্বর এক শয্যা, হৃদয়, পাথরের মতো,

করুণ বিষাদের সুরে বারবার ডুবে যায়, 

সবুজে, ঘন পানায় ছোঁয়ানো জলে।

অসুস্থ কান এ সুরের অহরহ বৃষ্টিতে;

এ বিষাদের দমকা বাতাস ঝড় হয়ে গেছে,

এ বিষাদের জলোচ্ছ্বাস হয়ে এসেছে প্লাবন,

এক ধাক্কায় বেড়ে গেছে ভিড় রাশি রাশি,

ডি. এ. পি., ইউরিয়া, ছোট ছোট দানার। 

আমি চোখ তুলে তাকাতে পারি না,

পৃথিবীর চোখে রাখতে পারি না চোখ,

ঘ্রাণে নেশাতুর নাসারন্ধ্র, ভীষণ।

ভালোবাসা বাসি বাদ

 এককথায়, এখন ভালোবাসা বাসি বাদ 

নেই আর সোনা, মিশে গেছে খাদ।


প্যানডেমিক; বাঁচতে চাওয়ায় অপরাধ;

এই প্রস্থান, পাকা কথা, নেই কোন খাদ।


এখন ভালোবাসা বাসি বাদ 

নাকে নেই গন্ধ, জিভে নেই স্বাদ।